হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী এগনেস চাওকে (২১) আসন্ন নির্বাচনে আইন সভার সদস্য হিসেবে প্রার্থিতা পদে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে। এটিকে হংকং-এর ওপর বেজিংয়ের কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপের সর্বশেষ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। খবর এএফপির। চাও ২০১৪ সালের আমব্রেলা আন্দোলনের প্রথম সারির নেত্রী ছিলেন। এই আন্দোলনের অন্যতম দাবি ছিল রাজনৈতিক সংস্কার। চাওয়ের প্রার্থিতা বাতিলের কারণ হিসেবে বলা হয়েছে যে, তিনি আধা স্বায়ত্তশাসিত দ্বীপটির আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকারের দাবিকে সমর্থন করেন। হংকংয়ে বর্তমানে এই আতঙ্ক বিরাজ করছে যে, চীনা সরকারের কড়া নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থার অধীনে শীঘ্রই সেখানে রাজনৈতিক সংলাপ বা আলাপ আলোচনা বন্ধ হয়ে যাবে। সম্প্রতি বেশ কয়েকজন গণতন্ত্রপন্থী কর্মীকে গ্রেফতারের প্রেক্ষিতে এই ভয় আরও ঘনীভূত হচ্ছে। ২০১৪ সালের আমব্রেলা মুভমেন্ট ব্যর্থ হওয়ার পর আন্দোলনকারীরা হংকংয়ের স্বাধীনতার ডাক দেয়Ñ যা বেজিং প্রশাসনকে ক্রোধোদীপ্ত করে তোলে। যার ফলস্বরূপ সম্প্রতি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে, চীনের সার্বভৌমত্বের প্রতি কোন হুমকি তিনি বরদাস্ত করবেন না। বেজিংপন্থী হংকং সরকার এর আগে স্বাধীনতাপন্থীদের আইন পরিষদে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল। কিন্তু চাওয়ের প্রার্থিতা বাতিলের মধ্য দিয়ে এটি প্রমাণিত হলো যে, যারা মধ্যপন্থী অর্থাৎ আধা স্বায়ত্তশাসিত হংকংয়ের কথা বলে, তাদের জন্যও আইন পরিষদের দরজা বন্ধ হয়ে গেল। চাও আগামী মার্চে হংকংয়ে অনুষ্ঠেয় উপনির্বাচনে প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। চাও ডেমোসিস্টো রাজনৈতিক দলের সদস্য ছিলেন। ডেমোসিস্টো দলটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা গণতন্ত্রপন্থী নেতা জোসুয়া উং সম্প্রতি কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হয়েছেন। ২০১৪ সালের আন্দোলন সংগঠিত করার অপরাধে তাকে কারাগারে যেতে হয়। ডেমোসিস্টো দলটি হংকংয়ের স্বাধীনতার দাবি করে কখনও কোন কথা বলেনি। বরং তারা স্বায়ত্তশাসন চেয়ে দাবি তুলেছিল যাতে তারা তাদের মনমতো প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারে। এখন চাওয়ের প্রার্থিতা পদে নিষেধাজ্ঞা জারির মাধ্যমে এটি স্পষ্ট হয়ে গেল যে, জোসুয়া উংসহ পরবর্তীতে আর কেউ নির্বাচনে প্রার্থী হতে চাইলে তাদের একই রকম পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে। ডেমোসিস্টোর পক্ষ থেকে সরকারের এই পদক্ষেপকে একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বলে কঠোর নিন্দা জানানো হয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সরকারের এই পদক্ষেপের মাধ্যমে হংকংয়ের পুরো যুব সম্প্রদায়ের আশা-আকাক্সক্ষাকে সমূলে বিনষ্ট করা হলো।’ ব্রিটেন হংকংকে ১৯৯৭ সালে ‘এক দেশ দুই শাসন পদ্ধতি’ এই চুক্তির অধীনে চীনের কাছে হস্তান্তর করে। দীর্ঘদিন ব্রিটিশ শাসনাধীনে থেকে হংকংবাসীদের মধ্যে যে গণতান্ত্রিক চেতনাবোধ ছিল এখন চীনের কঠোর নিয়ন্ত্রণে এসে তা মিলিয়ে যেতে বসেছে। চীনের মূল ভূখ-ে কঠোর নিয়ন্ত্রণমূলক একদলীয় শাসন এখন হংকংয়ের বাক স্বাধীনতা ও বিক্ষোভ করার অধিকারও হরণ করতে চলেছে।
Post Top Ad
Sunday, January 28, 2018
হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী চাওয়ের প্রার্থিতা বাতিল
Post Top Ad
Responsive Ads Here
Author Details
Templatesyard is a blogger resources site is a provider of high quality blogger template with premium looking layout and robust design. The main mission of templatesyard is to provide the best quality blogger templates which are professionally designed and perfectlly seo optimized to deliver best result for your blog.