মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত এর ভাসায় “ জম্মিলে মরিতে হবে অমর কে কোথা কবে? চিরস্থির কবে নীর হায়রে জীবন নদে? ”মৃত্যু! ছোট্ট একটি শব্দ। এই সেই শব্দ, যা আমাদের নিয়ে যায় অজানা কোন রাজ্যে, যার সম্পর্কে আমরা প্রায় কিছুই জানিনা। সুন্দর এই পৃথিবী ছেড়ে যেতে কত না কষ্ট! যখন মৃত্যুর ডাক এসে যায়, প্রিয়তমা স্ত্রী, আদরের সন্তানেরা, সবচাইতে আপন বাবা-মা কেউ তাদের বন্ধন দিয়ে ধরে রাখতে পারেনা আমাদের। কত সুন্দর করে আমরা সাজাতে চেয়েছি আমাদের জীবন, কত পরিকল্পনা ছিল; সব মিলিয়ে যায় মাত্র দুটি অক্ষরের এই শব্দের দ্বারা। আমরা প্রতিদিন এই মৃত্যুকে কত আপনভাবে নিজের সাথে বয়ে বেড়াই আমরা নিজেরাও জানিনা।মৃত্যুর আগে কী হয় মরণাপন্ন মানুষের সঙ্গে ? কী ভাবেন তাঁরা ? কাদেরই বা দেখতে পান চোখের সামনে ? এ নিয়ে গবেষণা চলছে দীর্ঘদিন ধরে । কিন্তু, মৃত্যুর আগে মানুষের সঙ্গে কী হয়, সে বিষয়ে এখনও পর্যন্ত সঠিকভাবে কোনও তথ্য মেলেনি । তবে, ক্যানিসিয়াস কলেজের একদল গবেষক এ বিষয়ে সম্প্রতি একটি তথ্য প্রকাশ করেছেন । যা শুনলে চোখ কপালে উঠবে আপনারও । ক্যানিসিয়াসের গবেষকরা দাবি করেছেন, মৃত্যুর কয়েক দিন আগে থেকে বা কখনও কয়েক ঘন্টা আগে, মানুষ তাঁদের প্রিয়জনদের দেখতে পান । অচেতন অবস্থাতেই অনুভব করতে পারেন তাঁদের অস্তিত্ব । অর্থাত, মৃত্যুর যত কাছে এসে মানুষ পৌঁছন, তত বেশি করে তাঁরা কাছের মানুষদের দেখতে পান । শুধু তাই নয়, ক্যানিসিয়াসের গবেষকরা এ বিষয়ে প্রমাণ দিতে সম্প্রতি একটি পরীক্ষা করে দেখেন । সেখানে একটি ঘরের মধ্যে বেশ কয়েকজন মরণাপন্ন মানুষকে তাঁরা রাখেন । তাঁদের দাবি, ওই মানুষরা নিজেরাই স্বীকার করেছেন, তাঁদের শেষ সময় যত এগিয়ে আসছে, তত বেশি করে কাছের মানুষদের দেখতে পাচ্ছেন তাঁরা । তারমধ্যেই আত্মীয়স্বজন, বন্ধু বান্ধবরা রয়েছেন । অনেকে আবার জানিয়েছেন, কয়েক মাস ধরেই তাঁরা তাঁদের কাছের মানুষদের দেখতে পাচ্ছেন । যদিও, ক্যানিসিয়াসের গবেষকদের দাবি মানতে অস্বীকার করেছেন অনেকেই । তাঁদের দাবি, মৃত্যুর আগে মানুষের সঙ্গে কী হয়, কেমন হয় তাঁর অনুভূতি, তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা চলছে ঠিকই । কিন্তু, এখনও এ বিষয়ে সঠিকভাবে মেলেনি কোনও তথ্যসোমাটিক মৃত্যুর পর অনেকগুলি পরিবর্তন ঘটে যা থেকে মৃত্যুর সময় ও কারণ নির্ণয় করা যায়। মারা যাবার পরপরই পার্শ্ববর্তী পরিবেশের প্রভাবে দেহ ঠান্ডা হয়ে যায়, যাকে বলে Algor mortis। মারা যাবার পাঁচ থেকে দশ ঘণ্টা পরে কঙ্কালের পেশীগুলি শক্ত হয়ে যায়, যাকে বলে Rigor mortis, এবং এটি তিন-চার দিন পরে শেষ হয়ে যায়। রেখে দেয়া দেহের নীচের অংশে যে লাল-নীল রঙ দেখা যায়, তাকে বলে Livor mortis; রক্ত জমা হবার কারণে এমন হয়। মৃত্যুর খানিক বাদেই রক্ত জমাট বাঁধতে শুরু করে। আর তারপরে দেহের যে পচন শুরু হয়, তার জন্য দায়ী এনজাইম ও ব্যাক্টেরিয়া। দেহের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিভিন্ন হারে মারা যায়। সোমাটিক মৃত্যুর ৫ মিনিটের মধ্যেই মস্তিষ্কের কোষগুলির মৃত্যু ঘটে। অন্যদিকে হৃৎপিণ্ডের কোষগুলি ১৫ মিনিট এবং বৃক্কেরগুলি প্রায় ৩০ মিনিট বেঁচে থাকতে পারে। এই কারণে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সদ্যমৃত দেহ থেকে সরিয়ে নিয়ে জীবিত ব্যক্তির দেহে প্রতিস্থাপন করা সম্ভব।
Post Top Ad
Friday, January 26, 2018
মৃত্যুর আগে মানুষ কী দেখে ! গবেষণা যা বলছে
Post Top Ad
Responsive Ads Here
Author Details
Templatesyard is a blogger resources site is a provider of high quality blogger template with premium looking layout and robust design. The main mission of templatesyard is to provide the best quality blogger templates which are professionally designed and perfectlly seo optimized to deliver best result for your blog.